ঢাকা, শনিবার   ০৩ মে ২০২৫

সুনামগঞ্জে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হলো ১৬২ শিশুকে    

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪২, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৪৯, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি ১৬২ শিক্ষার্থীকে অমানবিকভাবে বের করে দেওয়া হয়। জমিজমার মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকায় বিদ্যালয় থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়।

সোমবার উপজেলার মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয়, তারা যাতে মাঠে বসেও পরীক্ষা দিতে না পারে সে জন্য কলেজছাত্রদের ফুটবল দিয়ে মাঠে খেলতে নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ। ফলে স্কুলের পেছনে সড়কের পাশে খোলা আকাশের নিচে বসে পরীক্ষা দিয়েছে শিশু শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে বিদ্যালয়টির। ১৯৯৪ সালে মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ৩৩ শতক জমি দানপত্র রেজিস্ট্রি করে দেন একই গ্রামের ঠাকুর চান দাসের ছেলে সারদা কান্তি দাস। প্রায় তিন বছর পাঠদানের পর বিদ্যালয়টি ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়। ঘর না থাকায় পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ থাকে। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের জমি খালি থাকায় সে জমিতেই দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজের ৪ তলা ভবন নির্মিত হয়। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে দোয়ারাবাজার কলেজের টিনশেড ঘরটি। পরে ২০০৭ সালে আবার দোয়ারাবাজার কলেজের পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। 

কিন্তু সম্প্রতি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, দাতা সারদা কান্তি দাস বিদ্যালয়কে যে জমি দানপত্র করে দিয়েছিলেন, সেটি পরবর্তী সময়ে কলেজকে দানপত্র করে দিয়েছেন। তা জেনে গত বৃহস্পতিবার মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য জমি বন্দোবস্তের আবেদন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জেনে দোয়ারাবাজার কলেজের অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হন। তিনি ওই দিনই বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড খুলে ওই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। গতকাল বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের ১৬২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষ একরামুল হক শিক্ষার্থীদের ঘরে ঢুকতে না দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে প্রখর রোদে খোলা আকাশের নিচে পরীক্ষা দিয়েছে শিশু শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা সারদা কান্তি দাস বলেন, দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজে এবং মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জমি দান করেছি। মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শুরু হওয়ার কয়েক বছর পর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কলেজ অধ্যক্ষ ওই জমি কলেজের নামে লিখে দেওয়ার অনুরোধ করে। তখন আমি দানপত্র দলিল করে দিই। এখন সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করলেই ভালো হয়।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন দোয়রাবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল হক। তিনি বলেন, মংলারগাঁও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কলেজের জমিতে কোনও স্কুল ঘর কখনোই ছিল না, এখনও নেই। ওই বিদ্যালয়ের শিশুরা কোথায় পরীক্ষা দিয়েছে, তাও তার জানা নেই।  

একে//এসি   

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি